18 February 2014

 

 

আজ সকালে তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠতে হল ফজরের সময়। তৈরি হয়ে নিলাম কাপড় পরে দ্রুত। নামাজ পড়তে হবে বায়তুল কুদ্দুস মাসজিদে। কারন আমি মেহেদি কে কথা দিয়েছি ঠিক ফজরের পরপরি পড়াতে আসবো। কারণ আমার ধারণা ছিল ৮ টা থেকে কোচিং এ ক্লাস নিতে যেতে হবে। চলে গেলাম নামাজ পড়ে মেহেদী কে পড়াতে। ও তৈরি হয়ে ছিল। আজ গেট খুলতে পারলাম নিজে থেকেই। মেহেদী কে পড়ানোর মাঝখানে ডাঃ আব্দুস সামাদ ভাই প্লেটে করে দুধ আর খেজুরের রসের মধ্যে ভেজানো চিতই পিঠা নিয়ে আসল। গন্ধ ছিল অসাধারণ! উনার ভায়রা ভাই দেশ থেকে নিয়ে এসেছে। একদন খাটি দুধের তৈরি। আমি খেয়ে দেখলাম, সত্যিই অসাধারণ স্বাদ! উনি আবার পলিথিনে ব্যাকে করে কিছু বরই দিয়ে দিলেন নাইমার জন্য। কিন্তু নাইমা কোথায়! কোচিং থেকে রেজা ফোন করে জানালো, আজ ক্লাস ৯ টা থেকে। আমি কিছু সময় পেয়ে গেলাম। মেহেদীকে পড়িয়ে ৮ টার সময় বের হয়ে বাসায় চলে আসলাম। কিছুক্ষণ অন্তত বিশ্রাম করা যাবে। ৯ টার আগে দিয়ে কোচিং এ গেলাম। আজ ক্লাস ১০ এর উপরে একটু চোটপাট দেখাতে হল। ওরা ঠিকমত পড়ে না। ক্লাসে মনে হয় সব কিছুই বুঝে কিন্তু পরীক্ষা নিলে একেবারেই কিছুই পারে না। কাজেই বকাঝকা করতেই হল।  বিকালেও একই অবস্থা। এবার কোচিং এর ১০ এর ছাত্রছাত্রীগুলার মধ্যে দুই একজন বাদে বাকী গুলা below average বা তার চাইতেও নীচে। খুব সsharp আমি দেখলাম একমাত্র কাইমুর রহমান (সামিন) কে। ছাত্রীদের মধ্যে মুনিয়া ভাল। আর এবার ক্লাস ৯ এর student গুলা overall ভাল। ওদের response বেশ ভাল বলতে হবে। আজ বিকালে ক্লস নিতে নিতে দুর্ঘটনা ঘটে গেল। এজন্য আমি মহান আল্লহ পাকের কাছে মাফ চাই। দুইটা ক্লাস পরপর এমন ভাবে ছিল আর আমি ক্লাস নেয়াতে এমন ভাবে মশগুল হয়ে গেছিলাম যে আমার আসরের নামাজ যে পড়া হয় নাই সেটা আমার একদমই মনে ছিল না। ঠিক ৬ টার সময় যখন ক্লাস শেষ হল তখন মাগরিবের আযান শুনে মনে হল, আমি তো আসরের নামাজ পড়ি নাই! বেমালুম ভুলে গেছিলাম। বারংবার এস্তেগফার করলাম আল্লহপাকের কাছে। মহান আল্লহপাকের দয়া আর করুণা আমার অপরাধের চাইতে সীমাহীন বেশী।

 

দুপুরে মারুফ কে ফোন দিয়ে নাইমার জন্য appointment নিতে হল ডাঃ রাশিদা খানম এর কাছে ল্যাব এইডে। সন্ধ্যা ৭ টায় ৭ নং সিরিয়াল। মারুফ আমাকে ফোন করে জানিয়ে দিল। মারুফ এখন ল্যাব এইডে চাকরী করার সুবাদে ওকে সিরিয়াল এলখাতে বলতে সাহস করলাম। অবশ্য আমি ওদের সিরিয়াল দেয়ার যতগুলা নাম্বার আছে সবগুলাতে চেষ্টা করেও আমি কাউকে পাই নাই। অগত্যা মারুফকে বলতেই হল। সন্ধ্যায় বাসায় এসে দেখি হেনা আর ওর মা ময়ুরফুফু এসেছেন। আমিও নামাজ পড়ে উনাদের সাথে গল্প করলাম। হেনারা এখন মতিউর রহমান আঙ্কেলদের বাসায় ৬ তালায় থাকে। নাইমা ফোন দিয়ে জানাল আসছে। ওকে নিয়ে ল্যাব এইডে যেতে হবে। একটু আগে ফিরলাম। গাড়ীতে অনেক রকম কথা হল। নাইমা আমাকে একরম ছেড়েই চলে গেছে। মূল কারণ আমার বেকারত্ব। এখন ও আর আমার সাথে থাকাও পছন্দ করছে না। আমি যদি চাকরী পাই তবে আসবে বলল। আর বলল মাঝে মাঝে বেড়াতে আসবে। কোনটা ওর মনে কথা আর কোনটা মুখের কথা বুঝতে পারলাম না। কিন্তু ও যে কিছুটা মনক্ষুণ্ন সেটা স্পষ্ট। কিন্তু আমি এখন আসলেই অসহায়। আমি চাইলেই একটা চাকরী যোগাড় করতে পারি না। চেষ্টা কম করা হচ্ছে না। আমারো মনটা অনেক খারাপ হল নাইমার কথা শুনে। কিন্তু নাইমা সেটা বুঝলো কি? ও একবারো চিন্তা করলো না যে, ও বাসায় না থাকলে আমারও ভাল লাগে না। গাড়ি বাসার গেটে আসলে আমি শুধু, ‘আসি। আল্লাহ হাফিজ’। বলেই বিদায় নিলাম। আমার বলার মত আর কিছু ছিল না। একজন বেকারের আর কিই বা বলার আছে?

View shawon1982's Full Portfolio