'অটো' নেয়া

আমার খালাতো বোনের মাধ্যমে ভার্সিটিতে ‘অটো’ নেয়ার ব্যাপারটা প্রথম শুনেছিলাম। সবাই মিলে ক্লাস বর্জন করা। সেটা যে কারণেই হোক। ভার্সিটিতে ব্যাপারটা ‘অটো’ নেয়া বলে। BUET এ পড়াকালীন আমার সময়ে আমরা খুব বেশী অটো নেই নি। দুইবার এর কথা মনে পড়ছে। তার মধ্যে একবার আবার সেন্ট্রালি অটো নেয়া ছিল। সবাই মিলে একসাথে করতাম দেখে গায়ে লাগতো না ব্যাপারটা। তবে টিচারদের গোচরে না এনে অটো নিলে সেটার পরিণতি ভাল নাও হতে পারে। সেই ভুলটা আমরা একবার করেছিলাম। আমাদের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখপ্রদ ছিল না। এটা তাও আমি যা বলছি অন্তত ১৭ বছর আগের কথা। প্রথাটা এখনও আছে বলেই জানি।

 

ভার্সিটির ‘অটো’ দিয়ে আলাপ শুরু করলেও আমার প্রসঙ্গ আসলে অন্যখানে। এই প্যান্ডেমিকের মধ্যে আমাদের যা অবস্থা হচ্ছে ক্রমাগত, তাতে মাঝে মাঝে এতটাই হতাশ লাগে যে মনে হয় নিজের জীবন থেকে ‘অটো’ নিয়ে হাত পা ধুয়ে বসার কোন উপায় নেই? আসলেই উপায় নেই। আমাদের জীবনের চৌহদ্দিতে আমরা অনেক কিছুতেই বাঁধা পড়ে থাকি। এত দায়িত্বের নিগড়ে থাকি যে, মন ‘অটো’ নিতেও চাইলেও শরীর তো ‘অটো’ নিতে পারে না। অবশ্য একটা সময় আসবে যখন আমাদের কে ‘অটো’ নিতে বাধ্য করা হবে। তখন সব পড়ে থাকবে যে যার মত করে, শুধু ‘অটো’ নিতে বাধ্য করা একজন মানুষ নাই হয়ে যাবে। এটাই জীবনের স্বাভাবিক নিয়ম।

 

মাঝে মাঝে চিন্তা ভাবনাগুলো এলোমেলো হয়ে যায়। সাত পাঁচ ভাবতে থাকি। করোনা পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের কোন আশার আলো আমরা দেখতে পাচ্ছি কি? কবে সব কিছু স্বাভাবিক হবে? কবে চাইলেই কোন বাধা বিঘ্ন ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে পারবো আগের মত? কবে চাইলেই ছুটে ছুটে চলে যেতে পারবো প্রিয় মানুষদের কাছে? প্রিয় মানুষগুলো যে প্রিয় কিছু ‘ক্ষণ’ও সাথে করে নিয়ে আসে সেটা কি আমরা উপলব্ধি করতে পারি? প্রিয় এমন কিছু ‘ক্ষণ’ আমাদের জীবনে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকতে পারে। সে জিনিস থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রার কোন কিছুই যেন আর সুরে বাজছে না। সবকিছুই কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে যখন কোন প্রিয় মানুষের কথা শুনি যে সে রোগগ্রস্ত হয়ে পড়ছে, তখন নিজের ভেতরেই কেমন যেন হতাশা কাজ করতে থাকলে। সবকিছু আরো বড়ো বেশী এলোমেলো লাগে তখন।  

Author's Notes/Comments: 

২৯ জুন ২০২১

View shawon1982's Full Portfolio