২০ মে ২০২০

** বন্ধের দিনগুলো এখন যেমন যায়

= = = = = = = = = =


দিনের পর দিন কিভাবে যেন পার হয়ে যাচ্ছে। দিন তারিখের কোন ঠিক ঠিকানা নেই। কি বার, কত তারিখ এসব কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলতেও পারি না। হাতের মোবাইল ফোন দেখে বলা লাগে, যেমন ঠিকমত সময় দেখে নিতে বলা লাগতো। প্রতিটা দিন কেমন একঘেয়ে রুটিনে চলে গেছে ঘরে মধ্যে থেকে থেকে। তবুও দিনগুলো কেমন যেন দ্রুততার সাথেই পার হয়ে যাচ্ছে কের পর এক। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না, তবুও দিন পার হয়ে যাচ্ছে। বই পড়া শুরু করেছিলাম এক সময়। বেশ কিছু বই পড়েও ফেলেছি গত দুই মাসে। কিন্তু এখন কেমন যেন পড়তেও আলসেমি লাগে। এ কেমন অখন্ড অবসর যাকে আমরা কোনভাবেই সংজ্ঞায়িত করতে পারছি না। স্থবিরতার মাঝেও অন্যরকম একটা স্থবিরতা চলে এসেছে সবকিছুতেই। যেদিকেই দেখি, যাই করি না কেন, সবকিছুতেই একটা অবসাদ ভর করে চলেছে। মাঝে মাঝে মেজাজও ঠিক রাখতে পারি না। হয় নয় কথায় চেচিয়ে উঠি অনাবশ্যকভাবে। নিজেকে প্রবোধ দিয়েও বোঝাতে পারি না।

 

অনেক চেষ্টা করছি দূরাতীর আর নিকটাতীতের ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো কমে করবো না। তার পরেও কেন জানি মনে হতে থাকে। যা মনে করতে চাই না, সেগুলোই বারবার মনে আসতে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়া খুললে যা দেখতে চাই না সেগুলোই চোখের সামনে ভাসে। কেন এমন হয়? অপছন্দ করি বলেই কি সেগুলো প্রকটভাবে চোখে পড়ে? অনেক সময় দেখা যাচ্ছে অতি তুচ্ছ কারণে রেগে উঠছি। হাইপার টেনশন তো অনেক আগে থেকেই ছিল। দেখা যাচ্ছে কারণে অকারণে প্রেসার বাড়িয়ে ফেলছি। অথচ কাজের মধ্যে থাকলে মনে হয় না এগুলো হত। জানি না। সবকিছুর মধ্যে থেকেও যখন মনের ভেতর কোন কিছু নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব চলতে থাকে, মানসিক পীড়া সবচেয়ে বেশী তখন হতে থাকে। আমি কেন এমন জানি না, আমি সাধারণত গড্ডালিকায় গা ভাসাতে চাই না। অতি তুচ্ছ আজে বাজে বিষয় নিয়ে যেখানে মজা করতে একপাল লোক ঝাপিয়ে পড়ছে সেখানে আমি সেখানে মজা খুঁজে পাচ্ছি না। সেগুলোতেও আমার মজা লাগার কারণ খুঁজে পাচ্ছি না কারণ সেগুলো অত্যন্ত নির্বোধের মত মথাবার্তা লেখা বা এমন কিছু লেখা যেগুলো নিয়ে মজা করা বা পাওয়া আমার শিক্ষাদীক্ষা বা বয়সের সাথে কোনভাবেই যায় না। নিজেকে আমি সেখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসছি। এসব আলতু ফালতু কোন বিষয়ে আর আমি কর্ণপাত করবো না।

 

নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য আমি নানা রকম কাজ করছি। আমার খুব প্রিয় একটা কাজ হল রাতে যদি ঘুম না আসে তাহলে বেতার নাটক শোনা। নাটকের ডায়লগ শুনতে শুনতে পুরো দৃশ্যটা আমাকে কল্পনা করে নিতে হবে। এতে নিঃসন্দেহে কল্পনা শক্তি বাড়ে। বেশ ভাল লাগে ব্যাপারটা। কখনও নাটক শুনি আবার কখনও অডিও গল্প শুনি। উপন্যাস পাঠ শুনি। ভাল লাগে। মন দিয়ে শুনতে হয়। এরপরে মন আজে বাজে জিনিস নিয়ে চিন্তা করে না।

 

রসায়ন শাস্ত্র নিয়ে পড়াসোনা বা কেমিকৌশলে পড়া সত্ত্বেও দেখা গেছে রয়াসন নিয়ে আমার ঘাটাঘাটি বেশ কম হয়ে যাচ্ছিলো। নিজেকে আবার সেদিকে ফিরিয়ে আনছি। হাতের ধারে রসায়নের বই নেই! এই একটা দুঃখ। এখনকার দিনে অবশ্য ইন্টারনেটে এত কিছু পাওয়া যায় যে পাঠ্য বই বিশেষ করে হাতের ধারে না থাকলেও খুব একটা অসুবিধা হয় না। কিন্তু গল্প উপন্যাসের বেলায়? আমার ক্ষেত্রে এটা কার্যকরী হয় না। গল্পের বইটা নিয়ে হাতে নিয়ে না পড়লে আমার কিছুতেই শান্তি হয় না। কিছু পড়লাম বলে মনেই হয় না। এজন্য আমার বুক-শেলফ ভরা শুধুই গল্প উপন্যাসের বই। কবিতার বইও কিছু আছে অবশ্য। তবে বেশী না। মাঝে মাঝে মন যখন বেশী খারাপ থাকে তখন লিখি। নিজের অতীত স্মৃতি দর্শন সবকিছু নিয়েই লিখি। ধারাবাহিক কিছু না। যখন যা মাথায় আসে তাই লিখি। এই এখন যেমন লিখছি। তবুও যেন সময় কাটতে চাইছে না। বার বার মনে হয়, এরপর কি? আর কি করি?

 

View shawon1982's Full Portfolio