২৭ মার্চ ২০২০

বেঁচে আছি এক নৈঃশব্দ্যের শহরের প্রহরী হয়ে। পুরো শহর জুড়ে এক অদ্ভুত রকমের নিস্তব্ধতা। নিঃশ্বাসের শব্দও বুঝি শোনা যায়। রিক্সার ক্রিং ক্রিং আওয়াজ নেই, রাস্তায় বাসের হর্নের শব্দ নেই, নেই কোন ফেরিওয়ালার শব্দ। ঘরের ভেতর শুধু আমরা আমরাই কয়েকজন। পাশের বাসার ওরা কে কেমন আছে সেটা জানারও কোন উপায় নেই। ইন্টারনেটে যতটুকু যোগাযোগ ঐটুকু ছাড়া। সবকিছু কেমন যেন স্থবির হয়ে আছে। কিছুই যে করার নেই। রাস্তায় বের হবার কোন উপায় নেই। ঘরে বসে শুয়ে বসে বই পড়ছি, ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে যাচ্ছি। আবার ঘুম থেকে উঠে বই পড়ছি। অন্তহীন এক যাত্রা। এই চরম নৈঃশব্দ্যের ভেতর বই নিজে নীরব থেকেও আমার সরব একজন সঙ্গী। এরপরেও কেমন যেন ক্লান্তি ভর করে। এভাবে আর কতদিন? সবার এখন একটাই জিজ্ঞাসা! আর কতদিন? এক অদৃশ্য শত্রুর মোকাবিলায় আমরা সবাই বন্দী। ঘরে থাকাই যে এর সবচেয়ে বড় প্রতিকার।

 

নতুন বাসায় ওঠার পরে আজকেই প্রথম ছাদে উঠলাম। বহুতল বভবনের ছাদ। আমি খুন একটা ছাদে উঠি না। আজ উঠলাম। মনে হল একটু বাইরের বাতাস নেই। বাইরের সেই চেনা পরিচিত বাতাসটাও যেন এখন অন্যরকম। সেই শহর আর নেই। রেলিং এর পাশ দিয়ে রাস্তা দেখার চেষ্টা করলাম। সব কিছু বন্ধ। রাস্তায় কদাচিৎ একটা মানুষ বা রিক্সা দেখা যায়। ছাদের টবে থাকা গাছগুলোকেও কেমন যেন নিষ্প্রাণ দেখালো। প্রবাহমান বাতাসের কোন গতি নেই। সময়ের সাথে সাথে মনে হয় সবকিছুই যেন থমকে গেছে। এক অজানা অনিশ্চিতের পথে। মাঝে মাঝে আমি আকাশ দেখি। আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখি। আজ শহরের অবস্থা দেখে সেটুকু দেখতেও ভুলে গেছি। মানুষের বর্তমান তার একান্ত নিজস্ব ভাললাগাগুলোকেও ভুলিয়ে দিতে পারে। এই পিরিস্থিতিতে সেটাই প্রকটভাবে বুঝলাম।

View shawon1982's Full Portfolio